স্বদেশ ডেস্ক: নির্বাচনে জয় দরকার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। কিন্তু খুব সম্ভবত তিনি সেই জয় পাবেন না বলে মনে করছেন যুক্তরাজ্যের রাজনীতি বিষয়ক বিশ্লেষকরা। পার্লামেন্টে কয়েক দফা পরাজয়ের পর কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি জনসনের উত্তরণের জন্য চাই বিশাল জয়। কিন্তু চলতি জরিপগুলো বলছে, নির্বাচন হলে কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ে জনপ্রিয়তার এগিয়ে থাকবে বিরোধী লেবার পার্টি। এই জরিপ বলে দিচ্ছে, যুক্তরাজ্যের সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও তার কর্মকান্ড নিয়ে কী পরিমাণ অসন্তোষ কাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে লেবার পার্টির পরেই এগিয়ে থাকবে দেশটির ইন্ডিপেনডেন্স পার্টি। এই পার্টির একটাই লক্ষ্যÑ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়া। দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে পার্টিটি ইতিমধ্যেই যুক্তরাজ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। কিন্তু এই পার্টির প্রতি সমর্থন দেওয়া বর্তমান সদস্যদের অধিকাংশই কনজারভেটিভ পার্টির। প্রায় এক দশকের মিতব্যয়িতার নীতি ও কনজারভেটিভ আধিপত্যের পর যুক্তরাজ্য আজ উত্তর-দক্ষিণ ভাগে বিভক্ত। ইয়র্কশায়ার, হাম্বার, নর্থ ইস্ট ইংল্যান্ডের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে কম আগের যেকোনো সময়ের তুলনায়। এমনকি ২০১২ সালের পর থেকে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসেরও প্রবৃদ্ধি কমেছে কয়েকগুণ। তিন বছর আগেও জনসন অ্যান্টি এস্টাব্লিশমেন্ট অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনের দাবি তুলেছিলেন। এবারও নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে তিনি নির্বাচনের দাবি তুলেছেন। তবে এবারের দাবির ফলে ব্রিটিশ রাজনীতি ‘জনগণ বনাম পার্লামেন্ট’ এমন অবস্থায় ঠেকেছে।
জনসন যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন এক জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষ মনে করতেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ভালো নয় তিনি। অথচ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ওই একই সংখ্যক মানুষ বিশ্বাস করেন ‘জনসন ভিন্ন ধরনের এক প্রধানমন্ত্রী, যিনি যুক্তরাজ্যের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবেন না’। এর বাইরে সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যক জনগণ জনসনকে অসৎ মনে করেন।
প্রধানমন্ত্রী হতে অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন জনসন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর জনসনের পরিকল্পনা একের পর এক মুখ থুবড়ে পড়ায় তার প্রতি অনাস্থা তৈরি হয়েছে দেশটির জনগণের। ফলে ডিসেম্বরের ১২ তারিখ নির্বাচন হলেও ব্রিটিশ জনগণ জনসনের পক্ষে ভোট দেবেন কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এক্ষেত্রে ব্রিটিশ রাজনীতি আগামী মাস নাগাদ নতুন মোড় নিতে পারে।